কাজের ভিসায় দুবাই যাওয়ার উপায় ২০২৫

কাজের ভিসায় দুবাই যাওয়ার উপায় ২০২৫

কাজের ভিসায় দুবাই যেতে চাচ্ছেন? দুবাই যেতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেলে তবেই দুবাই গিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। বিস্তারিত পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে।

কাজের উদ্দেশ্যে দুবাই যেতে চাইলে প্রথমেই একটি ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে গেলে ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে ভিসার আবেদন করতে হবে। ভিসা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে এবং মেডিক্যাল টেস্ট করতে হবে।

কাজের উদ্দেশ্যে দুবাই যেতে চাইলে, দুবাই যেতে কী কী লাগে, দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় দুবাই যাওয়ার উপায় জানতে শেষ অব্দি পড়ুন।

কাজের ভিসায় দুবাই যাওয়ার উপায় ২০২৫

কাজের ভিসায় দুবাই যেতে চাইলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট সহ ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট না পাওয়া অব্দি ভিসা আবেদন করতে পারবেন না। তাই, বোয়েসেল/আমি প্রবাসী অ্যাপ/বিএমইটি বা অন্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে শুরুতেই একটি ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করুন।

ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে এসব প্রতিষ্ঠানে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অনলাইনেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। ভোটার আইডি কার্ড এবং পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে দুবাই এর বিভিন্ন কোম্পানির কাজের নিয়োগ দেখতে পারবেন।

এরপর, আপনার পছন্দের কাজের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য আবেদন করুন। আবেদন করার সময় মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট চাওয়া হতে পারে। আবেদন সম্পন্ন করার পর অপেক্ষা করতে হবে। নিজে আবেদন করতে না পারলে যেকোনো ভিসা হেল্পিং সেন্টারের সহযোগিতা নিতে পারেন।

ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে গেলে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা আবেদন করতে হলে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র লাগবে। এসব কাগজপত্র দিয়ে ভিসা আবেদন করার পর অপেক্ষা করতে হবে। ভিসা পেয়ে গেলে সহজেই দুবাই যেতে পারবেন এবং টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

দুবাই যেতে কি কি কাগজ লাগে?

দুবাই যেতে চাইলে ভিসা আবেদন করতে হয়। ভিসা আবেদন করার পূর্বে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়। ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসা সংগ্রহ করার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিতে হয়। আপনি যদি দুবাই যেতে চান, তাহলে কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন হবে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে —

  1. বৈধ পাসপোর্ট (কাজের মেয়াদের সমপরিমাণ মেয়াদসহ)
  2. পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  3. কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
  4. ভোটার আইডি কার্ড
  5. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  6. ওয়ার্ক পারমিট
  7. শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (যদি লাগে)
  8. স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট
  9. বিমানের টিকেট
  10. নাগরিক সনদপত্র
  11. ইউটিলিটি বিলের কপি (যদি লাগে)
  12. পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড
  13. স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ড (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

দুবাই ভিসা আবেদন করতে চাইলে এসব ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। তবে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কিছু ডকুমেন্ট লাগতে পারে আবার কিছু ডকুমেন্ট নাও লাগতে পারে। তবে, ভিসা করতে চাইলে এসব ডকুমেন্ট রেডি করে রাখা উত্তম। এতে করে, ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে ভিসা আবেদন করা অব্দি সকল ডকুমেন্ট চাহিবামাত্র প্রদান করতে পারবেন।

দুবাই কাজের বেতন কত?

দুবাইতে কাজের বেতন নির্ভর করে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর। এছাড়া, আপনি দুবাইতে কত বছর যাবত কাজ করছেন তার উপর ভিত্তি করেও বেতন বৃদ্ধি পেতে পারে। শুরুতে দুবাইতে বেশি বেতনে কাজ নাও পেতে পারেন। এছাড়া, আপনি কী কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ভিসা করে দুবাই গিয়েছেন, তার উপর ভিত্তি করে আপনার বেতন নির্ধারণ হবে।

তবে, কাজের প্রতি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকলে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব। আপনি যদি আগে থেকে উক্ত কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়ে থাকেন, তাহলে শুরুতেই ভালো বেতন পাবেন। আগে থেকে কাজ জানা না থাকলে, শুরুতে কম বেতন পেলেও কাজের প্রতি দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ধীরে ধীরে বেতন বৃদ্ধি হবে।

এছাড়া, আপনি যে ফিল্ডে কাজ করবেন, সেখানে আপনার পারফরম্যান্স কেমন তা যাচাই করা হবে। ভালো পারফরম্যান্স হলে বেতন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বিভিন্ন বোনাস প্রদান করা হতে পারে। সবমিলিয়ে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। 

দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি?

দুবাইতে বিভিন্ন কাজের জন্য লোক নিয়ে থাকে। আপনি ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করার সময় কী কাজের জন্য আবেদন করছেন তা দেখতে পারবেন। আপনার পছন্দের কাজে বা যে কাজে দক্ষতা আছে, সেই কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। দুবাইতে প্রায় সব কাজের চাহিদা রয়েছে।

তবে, রাজমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, মেকানিক, ড্রাইভার, টেকনিশিয়ান, প্লাম্বার ইত্যাদি কাজের চাহিদা প্রচুর। এসব কাজে যদি দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে এসব কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে দুবাই যেতে পারবেন। এই কাজগুলোতে বেতনও বেশি পাওয়া যায়।

দুবাই যেতে কত টাকা লাগে?

দুবাই যেতে কত টাকা লাগে তা নির্ভর করবে আপনি কোন মাধ্যমে দুবাই ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসার জন্য আবেদন করছেন। সাধারণত সরকারিভাবে এবং বেসরকারিভাবে ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে অনেকেই দালালের চক্করে পড়েন। এজন্য অনেকের অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়।

তাই, আপনি যদি দুবাই যেতে চান, তাহলে সরকারিভাবে ভিসার জন্য আবেদন করুন। সরকারিভাবে আমি প্রবাসী অ্যাপ, বিএমইটি, বোয়েসেল ইত্যাদি মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। বেসরকারিভাবে ভিএফএস গ্লোবাল সহ বিভিন্ন বেসরকার সংস্থার মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

সরকারিভাবে দুবাই যেতে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। অপরদিকে, বেসরকারিভাবে দুবাই যেতে চাইলে ৬-৮ লক্ষ টাকা অব্দি লাগতে পারে। তাই, দুবাই কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে সরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করুন।

পূর্বের তুলনায় বাংলাদেশ বিমানের টিকেটের দাম হ্রাস পেয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা যাতায়াত করতে পারবেন সাশ্রয়ে। তাই, সরকারিভাবে আবেদন করলে আরও কম খরচে বিদেশ যাওয়া সম্ভব।

দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত ২০২৫

দুবাই ভিজিট ভিসার খরচ সাধারণত ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১.৫০ লাখ টাকার মাঝে হয়ে থাকে। আপনি কতদিনের জন্য দুবাই ভ্রমণ করতে যেতে চাচ্ছেন, তার উপর ভিত্তি করে খরচ কমবেশি হবে। দুবাই গিয়ে সাধারণত ৬০ দিন পর্যন্ত থাকা যাবে।

ভিসা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং সহ থাকা খাওয়ার খরচ মিলিয়ে ৫-৭ দিনের ট্যুরে ১ লক্ষ টাকা অব্দি লাগতে পারে। তবে, আপনি যদি সাশ্রয়ী পন্থা অবলম্বন করেন, তাহলে আরও কম খরচেই দুবাই থেকে ঘুরে আসা সম্ভব হবে।

বিভিন্ন ভিসা সেন্টার থেকে দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। তবে, আপনি নিজেও ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে, খরচ আরও কিছুটা কমে আসবে।

দুবাই ভিসা কবে খুলবে ২০২৫

দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বর্তমানে খোলা আছে। কয়েক মাস আগে দুবাইয়ের কাজের ভিসা বন্ধ করে দেয়া হলেও তা আবারও খুলে দেয়া হয়েছে। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে দুবাই যেতে চান, তাহলে ভিসা আপ্লিকেশন সেন্টারে মাধ্যমে কিংবা নিজেই ভিসা আবেদন করতে পারবেন। বিএমইটি/বোয়েসেল/আমি প্রবাসী অ্যাপ ব্যবহার করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করতে পারবেন। 

নিজে ভিসা আবেদন করতে না পারলে বেসরকারি ভিসা প্রসেসিং প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে পারেন। তবে, চেষ্টা করবেন সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার। এতে করে খরচ অনেকটাই কমে আসবে। 

শেষ কথা

দুবাই যেতে কি কি লাগে, কাজের ভিসায় দুবাই যাওয়ার উপায়, দুবাই যেতে কত টাকা লাগে এবং দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করা হয়েছে এই পোস্টে। যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দুবাই যেতে ইচ্ছুক, তারা পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *